
[১৪ আগস্ট ২০২৫ খ্রিস্টাব্দে সম্প্রীতির নবম বর্ষ
২য় সংখ্যায় লেখাটি প্রকাশ হয়েছিল।]
শ্যামল দত্ত
‘জীবন এত ছোট কেনে’
আমাদের সুলতান
পাবনা শহরে আমরা যারা আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকে বেড়ে উঠেছি, তাদের অনেকের কাছেই মো. সুলতান আহমেদ একটি পরিচিত ও প্রিয় একটি মুখ। শহরের দিলালপুরে সরকারি মহিলা কলেজ সড়ক আর বাণী সিনেমা হল থেকে চারতলামুখী সড়কটা যেখানে মিলেছে, ঠিক সেখানেই ওদের ছোট্ট একতলা সাদা রঙের বাড়ি। পাবনায় সুলতানদের বাড়ির খুব কাছেই ছিল আমাদের বাড়ি, এক পাড়াতেই। আসলে পাবনা শহরটা খুব বেশি বড় না। এখন হয়তো শহরের আশেপাশে অনেক পাকা সড়ক হয়েছে, নতুন নতুন ¯’ স্থাপনা হয়েছে। কি? ‘ আমি বলছি এখন থেকে প্রায় দুই যুগ কিংবা তারও কিছু আগের কথা। তখন আমরা এই শহরের কিশোর-যুবা। শহরটার তখন একটাই মূল সড়ক ছিল আবদুল হামিদ রোড। সবাই বলতো, এটা শহরের বড় রাস্তা। এই বড় রাস্তার দু’পাশেই শহরের বড় বড় সব ¯’ স্থাপনা - পোস্ট অফিস, জেলা স্কুল, জেলখানা, বাণী সিনেমা হল, টাউন হল, অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরি, বাস স্ট্যান্ড, ট্রাফিক মোড় ইত্যাদি। কিন্তু ‘ ছেলেবেলায় আমার কেন যেন মনে হতো শহরটা আবদুল হামিদ রোডের বাণী সিনেমা হল থেকে শুরু করে চারতলা মোড় পর্যন্ত। কারণ হয়তো ‘মোল্লার দৌড় মসজিদ’- এই এলাকায় আমার বাড়ি আর ছেলেবেলায় এই এলাকাটিতেই ছিল আমার চলাফেরার অবাধ স্বাধীনতা।
বৃহত্তর পাবনা এমনিতেই সংস্কৃতির পুরোনো জেলা হিসেবে পরিচিত। যাঁদের পরিচিতি এই জেলাকে আলোকিত করেছে, তাঁদের মধ্যে আছেন কবি বন্দে আলী মিয়া, গীতিকবি গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, চল” চিত্র শিল্পী সুচিত্রা সেন, সংগীত পরিচালক বাপ্পী লাহিড়ী এবং আরো অনেকে। খেলাধুলাতেও এগিয়ে ছিল পাবনা। শহরের দিলালপুর এলাকাটিকে ছেলেবেলা থেকেই আমার মনে হতো সংস্কৃতিচর্চার আঙিনা। সুলতানদের বাড়ির মুখোমুখি কণ্ঠশিল্পী অণিমা রায়ের বাড়ি। অণিমা রায় সেই সময়েই বেতারের নিয়মিত কণ্ঠশিল্পী ছিলেন। তাঁর ছোট বোন সুদীপ্তা রায় পুতুলও ছিলেন রাজশাহী বেতারের সংগীতশিল্পী। আবার পুতুলদিদের বাড়ির পাশেই বিশিষ্ট তবলাশিল্পী শৈলেশ সান্যালের বাড়ি। শৈলেশ সান্যালের ছেলে পল্লব সান্যাল এখন দেশের অন্যতম তবলাশিল্পী হিসেবে পরিচিত। শৈলেশ সান্যাল্যের অনুজ দেবেশ সান্যাল ছিলেন নৃত্যশিল্পে পাবনার অন্যতম প্রধান শিক্ষক। এলাকার আরো একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ছিলেন জ্ঞানেন্দ্রচন্দ্র চক্রবর্তী। তাঁর ছেলে পুলক চক্রবর্তীও পাবনার নামকরা আইনজীবী ছিলেন। এই পাড়াতেই ছিলেন একজন বিশিষ্ট বংশীবাদক শংকরদা। দিলালপুরেই গোবিন্দ বাড়িতে থাকতেন দেশের অন্যতম উচ্চাঙ্গ সংগীতজ্ঞ শ্রী প্রমথ চৌধুরী। তাঁর ছেলেমেয়েরাও সংগীতচর্চা করতেন। গোবিন্দ বাড়ির পাশে আর একজন বিশিষ্ট তবলাশিল্পী ছিলেন সুধীর বসাক। তাঁর ভাতিজা নন্দও তবলাশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। দিলালপুরের প্রায় প্রতিটি বাড়ি থেকেই সকালবেলা কিংবা সন্ধ্যেবেলায় হারমোনিয়ামের সুর শোনা যেত। সুলতান নিজে গান-বাজনা না করলেও গান-বাজনার প্রায় প্রত্যেকের সাথে তার নিবিড় যোগাযোগ ছিল। ঢাকার নিকুঞ্জে সুলতান ওর বাড়ির বেজমেন্টটা এমনভাবে তৈরি করেছিল, যাতে ওখানে গান-বাজনার আসর বসানো যায়।
পাবনায় বাড়ির সিঁড়িতে এয়ারগান হাতে সুলতান তার বন্ধুদের সঙ্গে
আমাদের দিলালপুর এই এলাকাটির আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য তো নিশ্চয়ই ছিল। এই এলাকাটির মধ্যেই উপমহাদেশের কিংবদন্তি চলচ্চিত্রের মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের বাড়ি। এই এলাকায় শহরের বেশ কিছু বিশিষ্ট মানুষের বসবাস ছিল। শুরুতে লাহিড়ী পাড়ার কথা বলি। এখানে ছিলেন শহরের বিখ্যাত আইনজীবী ব্যোমকেশ লাহিড়ী। তাঁর প্রাসাদোপম অট্টালিকাটি এখনও পাবনার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। ১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধকালে ভারতের আকাশবাণী বেতার কেন্দ্র থেকে দেবদুলাল বন্দ্যোপাধায় নিয়মিত যে সংবাদ পরিক্রমাটি পাঠ করে গোটা জাতিকে স্বাধীনতার আকাক্সক্ষায় উজ্জীবিত করতেন, সেটির রচয়িতা ছিলেন এই লাহিড়ীপাড়ার প্রণবেশ সেন। এখানেই তাঁদের পৈতৃক বাসস্থান ছিল একসময়। লাহিড়ী পাড়ায় শহরের আর এক বিশিষ্ট আইনজীবী আবদুস সবুরের বাসভবন। এই বাড়িতে আমি সেই ছেলেবেলাতেই জননেতা মওলানা ভাসানীকে দেখেছি। এবার লাহিড়ী পাড়ার উল্টো দিকে তাকাই, সেখানে ইনস্টিটিউট অব ফাইন আর্টস্ ইফা’র অবস্থান । পাবনা জেলা শহরে সম্ভবত এটাই নাচ-গান এবং হাতে-কলমে যন্ত্রসঙ্গীত চর্চার অন্যতম কেন্দ্র। ইফা থেকে একটু এগিয়ে গেলেই লাল রঙের দোতলা বাড়িটা ‘পুষ্পালয়’। এখান থেকে চারতলার দিকে আর একটু এগিয়ে গেলেই সুলতানদের বাড়ি।
সুলতানের কথা বলতে গিয়ে পুরো এলাকার পরিচয় দিতে হয়েছে । কারণ এই পুরো এলাকাতেই সুলতান সবার সাথে মিশতো। এলাকার কোনো না কোনো অনুষ্ঠান বা ঘটনার সাথে যুক্ত ছিল সুলতান। তবে সুলতানের আরো একটা পরিচয় আছে, ও সামসুল ভাই, জয়নুল ভাই এবং মুন্না ভাইয়ের ছোট ভাই। পাবনার বাবু মিয়া একসময় খুবই পরিচিত ছিলেন পাবনা শহরে। পাবনা শহরে সম্ভবত সর্বপ্রথম মাইক, ব্যাটারি এসবের ব্যবসা ছিল বাবু মিয়ার। সেই বাবু মিয়ার সন্তান সুলতান। সুলতানের বেড়ে ওঠা পাবনা শহরেই। সেলিম নাজির উ”চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৭৮ সালে এসএসসি পাস করেছিল। এরপর পাবনাতেই ছিল বেশ কিছুদিন। তারপর ঢাকায় চলে আসে। পৈতৃক ব্যবসার দিকে না ঝুঁকে তৈরি পোশাকের বিভিন্ন শাখায় কাজ শুরু করে।
সুলতান কখনও অবসরে আছে এটা ভাবাই যায় না। পাবনা জেলা শহরের শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেলিম নাজির উচ্চ বিদ্যালয়। শহরের দিলালপুরে এই স্কুলটির অবস্থান । ২০১৯ সালে সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে স্কুলটির প্রাক-শতবর্ষ অনুষ্ঠান। এই উদ্যাপন কমিটিতেও সক্রিয় ছিল সুলতান। এ উপলক্ষ্যে আমরা একটি স্মরণিকা বের করেছিলাম। যদিও সুলতান স্মরণিকাতে কিছু লেখেনি, কিন্তু‘ প্রকাশনার প্রায় প্রতিটি পর্যায়ে ও নিয়মিত খোঁজ খবর রেখেছে। প্রকাশনার বিষয়ে ওর আলাদা দুর্বলতা ছিল। বড় ভাই প্রয়াত সামসুল ভাইকে নিয়ে একটি স্মারক গ্রন্থ’ প্রকাশ করার কথা ভেবেছিল সুলতান। মুদ্রণ ও প্রকাশনার অন্যতম কারিগর আমাদের অগ্রজ জাহাঙ্গীর আলম মুকুলের সঙ্গে এ নিয়ে অনেকবার ওর কথা হয়েছে। মুকুল ভাই কাজটা শুরুও করেছিলেন। সামসুল ভাইয়ের বন্ধু কবি মাকিদ হায়দারও এই প্রকাশনার কাজের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন। কিন্তু ‘ হঠাৎ মাকিদ ভাইয়ের মৃত্যুর পর কাজটা মাঝপথেই থেমে যায়। সুলতানের এই আকাক্সক্ষাটি আমরা আর কিছুতেই পূরণ করতে পারিনি। সুলতান
নিজে কখনও গান-বাজনা করেছে বলে আমার জানা নেই, কিন্তু‘ গান-বাজনার প্রতি ওর ছিল দারুণ আগ্রহ। পাবনার ইফা’র প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানে সুলতানের পৃষ্ঠপোষকতা ছিল। নিজে কখনও ও লেখালেখি করেনি, কিন্তু‘ ওর সময়কালে পাবনায় যারা নিয়সিত লেখালেখি করেছে, তারা প্রায় প্রত্যেকেই ছিল সুলতানের আপনজন। তাদের সঙ্গে আড্ডাতেও কেটেছে অনেক সময়। পাবনার সরওয়ার খান মিলন, ফয়জুল ইসলাম সুমন ওরা ছিল সুলতানের বন্ধু। খেলাধুলার প্রতিও সুলতানের আগ্রহ কম ছিল না। নিজে খেলার মাঠে না থাকলে কী হবে, খেলার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ওকে সবাই পেয়েছে। আমাদের দিলালপুরে দেশসেরা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় গোলাম আজিজ জিলানী ছিলেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের যুগ্ম-সম্পাদক। লাহিড়ী পাড়ার মাঠে শীতের সন্ধ্যায় তখন প্রায়ই ব্যাডমিন্টন খেলার আসর বসতো। অধ্যক্ষ এ আর শামসুল ইসলাম, গোলাম আজি জিলানীর মতো খেলোয়াড়রা এই মাঠে খেলতেন। সুলতানকে তখনও দেখেছি কী গভীর আগ্রহ নিয়ে সে খেলা দেখছে। ওর তখন বয়স কম, কিন্তু‘ খেলাধুলার প্রতি আগ্রহটা প্রবল।
আগেই বলেছি, সুলতান ছিল তৈরি পোশাক কোম্পানি ক্রিস্টাল গ্রপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। নিজের ব্যবসা পরিমন্ডলেও সবার কাছে সুলতান ছিল প্রিয়জন। বেশ কিছু দিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিল সুলতান। চিকিৎসার জন্য ভারতে দীর্ঘদিন থেকেছে। সেখান থেকেই নিয়মিত পোস্ট লিখেছে। যেন অসুস্থতা ওকে হার মানাতে পারেনি। তারপরও গত ২১ জুলাই সোমবার দুপুরে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলতান পাড়ি জমায় না ফেরার দেশে। সুলতান তার স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছে। শুধু তাই নয়, সুলতান রেখে গেছে ওর হাজার সুহৃদ। ওর মৃত্যুর খবরে পাবনার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও শোক জানানো হয়েছে। অনেকে ফেসবুকেও সুলতানকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন।
বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী রোখসানা ডেইজী লিখেছেন, ‘মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তোমাকে জান্নাত বাসী করেন। পরিবারের সদস্যদের ধৈর্য ধারণ করার তৌফিক দান করেন।’
জহুরুল ইসলাম বাবলা লিখেছেন, ‘ বন্ধু তুমি চলে গেলে! তোমার স্মৃতিগুলো মুছে গেলে না।’
আযম খান বাবলু লিখেছেন, ‘সুলতান খুবই ভালো মানুষ ছিল, আল্লাহ্ রাব্বুল আমিন যেন সুলতানকে জান্নাতে নসিব দান করেন।’
প্রলয় মৈত্র লিখেছেন, ‘সুলতান ভাই এর অকাল ও আকষ্মিক প্রয়াণে আমরা শোকাহত। তাঁর আত্মার শান্তি ও পরিবারের সকল সদস্যের জন্য রইল আন্তরিক সমবেদনা।’
মো. গোলাম হাসান লিখেছেন, ‘তাঁর অকাল মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। মহান রাব্বুল আল-আমিন তাঁকে জান্নাত দান করুন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সকল সদস্যদেরকে শোক সইবার শক্তি দান করুন।’
শুচি সৈয়দ লিখেছেন, ‘তোমার এভাবে চলে যাবার কথা ছিল কি? খুব কষ্টকর সংবাদ। আল্লাহ তোমাকে বেহেস্ত নসিব করুন।’
ইঞ্জিনিয়ার আফতাব লিখেছেন, ‘ খুব ভালো মানুষ ছিলেন। ব্যক্তিগত পরিচয় ছিল। আল্লাহ ওনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করুন।’
পরদিন ঢাকা থেকে ডা. ফারহানা নীলা লিখেছে, ‘আগামীকাল সকাল দশটায় সুলতান ভাইয়ের জানাজা পাবনায় হবার পর দাফন হবে। ২১ জানুয়ারি সুলতান ভাই ল্যাব এইডে ছিলেন আমাদের সাথে। আজ ২১ জুলাই সুলতান ভাই চলে গেলেন। আল্লাহ জান্নাতি করুন। ছয় মাসের ব্যবধান। জানি না ভাইয়া জেনেছে কিনা?’
নীলার বড় ভাইয়া ফয়জুল ইসলাম সুমনও কিছুদিন আগে অকালে প্রয়াত হয়েছে। আমরা আমাদের প্রিয়জন সুমনের পর আর এক প্রিয়জন সুলতানকে হারালাম।
ঢাকায় এসে খুব দ্রুতই সুলতান নিটিং, টেক্সটাইলস্, প্রিন্টিং ও গার্মেন্টস্ নিয়ে গড়ে তুলেছিল ‘ক্রিস্টাল গ্রুপ’। ঢাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়লেও সুলতানের মন পড়েছিল পাবনার মাটিতে। তাই পাবনার বিভিন্ন অনুষ্ঠান নিয়ে সুলতান প্রায় নিয়মিত ফেসবুকে পোস্ট দিত। পোস্টে সুলতান বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতো। ওর এমনি একটা পোস্ট দেখে একবার চমকে উঠেছিলাম। ও লিখেছিল : ‘হঠাৎ সঠাৎ মনে হয় জীবনে কিসের পেছনে, কী জন্য , কিসের তাড়নায় দৌড়ালাম, দৌড়াচ্ছি অবিরাম, আবার মনে হয় যে দেশে জন্মেছি যা বিদ্যেবুদ্ধি তাতে এক প্রজন্মের নয় প্রজন্মের পর প্রজন্মের দৌড় দরকার, সেখানে অবসর শব্দটা বিলাসিতা’।
সুলতানের এই পোস্টটি দেখে আমার হঠাৎ কথাশিল্পী তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস ‘কবি’র কথা মনে পড়ে গিয়েছিল। সমাজের অতি নিচু বংশের নিতাইচরণ গ্রামের সবাইকে চমকে দিয়ে কবি হয়ে উঠেছিল। নিতাইচরণের পারিবারিক পেশা ছিল ডাকাতি। পৈতৃক পেশায় না গিয়ে সে পালাগানের দোহার হয়েছিল। গ্রাম ছেড়ে যুক্ত হয়েছিল এক ঝুমুর দলের সাথে। সেখানে তার সাথে পরিচয় হয় শিল্পী বসন্তর। বসন্তর সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে ওঠে তার। কিন্তু ‘ বসন্ত মারা যায়। ঝুমুর দল ছেড়ে নিতাই বহু জায়গা ঘুরে আবার নিজের গ্রামে ফিরে আসে। এখানে এসে জানতে পারে গ্রামে তার প্রিয়জন ঠাকুরঝিও বেঁচে নেই। গভীর হতাশায় সে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে পদ রচনা করে, ‘জীবন এত ছোট কেনে?’
এখন মনে হয়েছে, জীবন এত ছোট বলেই সুলতান অবসর গ্রহণ করাকে বিলাসিতা মনে করতো।
0 Comments: